সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০২:১৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ার দখলে টিটো-মোশারুলের লড়াই, কার পক্ষ নেবে আ’লীগ আটপাড়ায় প্রধান শিক্ষকগণের মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত কয়রার বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট সভা ঠাকুরগাঁওয়ের মাদারগঞ্জ গরু হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেনের সাথে মতবিনিময় সভা প্রতারণার নতুন কৌশল ঠাকুরগাওয়ে মসজিদ, মাদ্রাসা সহ পাকাবসতবাড়ী নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা আটপাড়ায় খুদে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিলেন ইউএনও এম. সাজ্জাদুল অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ঠাকুরগাঁওয়ে বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের এক্সরে মেশিনটি প্রায় ১৫ বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে, আর অন্যদিকে চিকিৎসক সংকট ফরিদপুরে গরমে বেড়েছে তাল শাঁসের বিক্রি
স্তনের চাকা কী ক্যান্সারের আতংক

স্তনের চাকা কী ক্যান্সারের আতংক

স্তনের চাকা কী ক্যান্সারের আতংক

ডাঃ লায়লা শিরিন,সহযোগী অধ্যাপক, ক্যান্সার সার্জারী, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল।

স্তনের চাকা থাকলে এ সময়ে সবাই আতংকিত হন, যদি কোন নারী অনুভব করেন স্তনে চাকা হয়েছে! আচ্ছা, বিষয়টি কি আসলেই এতটা আতংকের? যদি বলি না। অবাক হওয়ার কিছুই নেই, তাহলে আসুন জেনে নেই স্তনের সব চাকাই ক্যান্সার কিনা।

প্রথম : সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা প্রথমেই অনুভব করেন স্তনে ব্যাথা-বেদনা, জ্বালাপোড়া ভাব, মাসিকের একটি সুনির্দিষ্ট সময়ে স্তনের ভারিভাব আর আকারে বৃদ্ধি হয়। এই সমস্যা গুলো দেখা যায় নির্দিষ্ট সময়ের পর আর থাকে না অথবা একটা সময়ে আপনার এই অস্বস্তি কমে যাবে। চাকা ভাব পুরো পুরি চলে যাবে অথবা কম অনুভব হবে। এটা খুব স্বাভাবিক। মাসিকের নির্দিষ্ট সময়ে মেয়েলি কিছু হরমোন উঠানামা করার কারনে এই চাকা বা চাকা ভাব হতে পারে। এটি কিন্তু ক্যান্সার এর থেকে অনেক বেশি ক্ষেত্রে মহিলাদের থাকে। ক্যান্সার আতংকের কারনে এই বিষয় নিয়ে মহিলারা প্রচন্ড উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এটিকে ফাইব্রোসিস্টিক পরিবর্তন বলা হয়। বিভিন্ন সময়ে মেয়েদের ঋতুস্রাব , সন্তানধারণ এবং বাচ্চাকে স্তন্যদানের কারনে স্তনে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। যার কারনে স্তনের কিছু যায়গায় ছোট ছোট সিস্ট যা পানিপূর্ন থলের মত হয়। এটা কিন্তু অনেক নারীই অনুভব করতে পারেন। যার ফলে যেটি আসলে ক্যান্সার নয়, ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষনও নয়, এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

দ্বীতিয় : সাধারণত অনেক সময়ে স্তন্যদানকারী মায়েদের স্তনে চাকা ভাব থাকে। এটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। যদিও এটি একটি সিস্ট, পানির বদলে স্তনের দুধ জমা হয়ে তৈরি হয়। আমরা চিকিৎসের ভাষায় একে বলি গ্যালাক্টোসিল। অনেক সময় বাচ্চাকে স্তন্য দান করতে করতেই এটি এক সময়ে ভালো হয়ে যায়। কিন্তু কিছু কিছু সময় এগুলোকে ছোট্ট অপারেশন এর মাধ্যমে সমাধার করতে হয়।

তীতৃয় : বিশেষ করে কিশোরী বা তরুণী মেয়েদের স্তনে এক ধরনের চাকা নিয়ে আসেন। এ চাকা গুলো কিছুটা শক্ত হতে পারে। যদিও ক্যান্সার এ যেমন পাথরের মত শক্ত চাকা অনুভব হয় তেমন ঠিক নয়। এটিকে বলা হয় ব্রেস্ট মাউস বা ব্রেস্টের ইঁদুর। ইঁদুরের মতই এটি এক জায়গায় না থেকে আরেক যায়গায় দৌড়ে চলে যায়। চিকিৎসসকের ভাষায় এটিকে বলে ফাইব্রোএডেনোমা। এটিকেও কিন্ত স্বাভাবিক স্তন পরিবর্তনের অংশ হিসেবে ধরা হয়। যেখানে স্তনের গ্ল্যান্ড অথবা ফাইব্রাস অংশ বেশি করে তৈরি হয়। যেহেতু এটিকে স্বাভাবিক স্তনের টিস্যু হিসেবে ধরা হয় এজন্য ছোট থাকলে অপারেশন করতে বলা হয় না। আর ক্যান্সার হবার প্রবনতা হিসেবে এটাকে গন্য করা হয়না।

যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো তা আপনি বুঝতে পেরেছেন এবং ক্যান্সার ভেবে আতংকিত না হয়ে বরং দুশ্চিন্তা দূর করুণ।
নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করে এবং পরিবর্তন সাথে সাথেই নির্নয় করার সম্ভবআসুন এবার ‘নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করি’ এ বিষয় নিয়ে একটু আলোচনা যাক।
নিজে নিজের স্তন পরীক্ষা করা :

আপনারা সবাই জানেন নিজে নিজের স্তন পরীক্ষা এই ক্যান্সার সবার প্রাথমিক নির্নয় এর জন্যে গুরুত্বপূর্ণ।
কোন বয়সে থেকে করবেন ?

সাধারণত ২০ বছর বয়স থেকে।

কতদিন পর পর করা দরকা?

অন্তত্য প্রতি মাসে একবার। এটি আপনি অভ্যাসে পরিনত করুন।

এট কখন করবেন?
মাসিক শুরু হবার পর, প্রথম ১০ দিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে।

যদি মাসিক না হয় তখন কী করবেন?

ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ দিয়ে রাখুন, যেদিন স্তন পরীক্ষা করবেন সে দিন ( সাধারণত ব্যাথা আছে দরকার নেই, যেদিন কম ব্যথা থাকে সেদিন চেক করবেন)। আবার পরের মাসগুলোয় এই দিনে স্তন পরীক্ষা করুন।

গর্ভবতী বা স্তন্যপানের সময়ও কি স্তন পরীক্ষা করার দরকার?
অবশ্যই করতে হবে, নিশ্চিত ভাবেই করুন। একই পদ্ধতিতে। কারন এই সময়ের ক্যান্সার সাধারণত মিস হওয়ার সম্ভবনা বেশি, যার কারনে বেশির ভাগ খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। তাই।

এ ভাবে কত বয়স পর্যন্ত করবেন?
আজীবন করতে হবে, খেয়াল করবেন আপনার স্তনে অস্বাভাবিক নতুন কিছু হয়েছে কিনা। মনে রাখবেন আমরা যত বেশী দিন বেঁচে থাকি তার সঙ্গে ততই আমাদের ক্যান্সারের প্রবনতা বেড়ে যায়। তাই যত বয়স পর্যন্ত বেচে থাকবেন নিজে সচেতন থাকবেন। নিজের খেয়াল রাখবেন। ভাল থাকে। সাবাইকে ধন্যবাদ।

লেখক
ডাঃ লায়লা শিরিন
সহযোগী অধ্যাপক, ক্যান্সার সার্জারী, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল।

শেয়ার করুন .....




© 2018 allnewsagency.com      তত্ত্বাবধানে - মোহা: মনিকুল মশিহুর সজীব
Design & Developed BY ThemesBazar.Com